Headlines
Loading...
রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের আমল | Best Dua zikir Amal For Shab-e-Qadar

রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের আমল | Best Dua zikir Amal For Shab-e-Qadar

বছরের সকল মাস অপেক্ষা পবিত্র রমজান মাসের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ রাত হলো লাইলাতুল কদর বা শবে কদর-এর রাত। এই একটি রাতের ইবাদত হাজার মাস ইবাদত অপেক্ষা উত্তম। তাই মোমিন বান্দার উচিত রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোতে পরিবারের সকলকে নিয়ে সারারাত ইবাদতে কাটিয়ে দেয়া। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রমজানের শেষ ১০ রাত শুরু হলে আল্লাহর নবী (সাঃ) কোমর বেঁধে নামতেন। তিনি নিজে রাত জেগে ইবাদত করতেন এবং তার পরিবারের সবাইকে ইবাদতের জন্য জাগিয়ে দিতেন।’ সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০২৪; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৭৪।

আমরা কেউয়ি নিশ্চিত করে তথা শতভাগ গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারবে না যে রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের বিজোড় তারিখ গুলোর কোন তারিখে শবে কদরের রাত হয়ে থাকে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন যে, “তোমরা রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের বিজোড় তারিখ গুলোতে শবে কদর তালাশ করো”। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২০১৭। রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের বিজোড় তারিখের রাতগুলো খুবই ফজিলতপূর্ণ ও বরকতময়। কেননা এই ১০ দিনের বিজোড় তারিখের রাতগুলোতে শবে কদরের রাত হয়ে থাকে। যদি কেউ এই বিজোড় তারিখের রাতগুলোতে জেগে থেকে ইবাদত করে কাটিয়ে দেয় তবে সে নিশ্চিত শবে কদর পেয়ে যাবে ইন্শাআল্লাহ। 

আজ আমি তিনটি আমলের কথা বলবো। যদি কোন ব্যক্তি রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের বিজোড় তারিখগুলোতে অর্থ্যাৎ ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ এই পাঁচটি রাতে জেগে থেকে ইবাদত করে তবে সে দিন-দুনিয়ার সমস্ত কিছুই পেয়ে যাবে। তার মনের সকল নেক আশা, চাওয়া-পাওয়া পূরণ হবে ইন্শাআল্লাহ। তার রিজিকের সমস্যা, চাকুরী পাওয়া, পছন্দের বিয়ে হওয়া, পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে পাশ হওয়া, গরীবি হাল থেকে মুক্তি, বিদেশ গমণের ইচ্ছা পূরণ, বাড়ি বা দোকান ক্রয় করার ইচ্ছা, আপনার প্রতি বিরক্ত এমন কাউকে রাজী করানো ইত্যাদি যাবতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য আজকের বলা তিনটি আমলের যে কোন একটি অবশ্যই করুন। 

আমল - ১

সময় - ৩ দিন।
এশার নামাজের পর কিংবা তাহাজ্জুদ নামাজের পর এই আমল করতে হবে। আমলের শুরুতে ৩ বার যে কোন দরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে। এরপর, 
আস্তাগফিরুল্লাহ রব্বি মিন কুল্লি যামবিঁও ওয়া আতুবু ইলাইহি ১০০ বার পাঠ করতে হবে। 
এরপর, ১৯০০ বার হাসবুনাল্লাহু ওয়ানিমাল ওয়াকিল পাঠ করতে হবে এবং শেষে আবারও ৩ বার দরুদ শরীফ পাঠ করতে হবে যে দরুদ শরীফ পূর্বে পাঠ করা হয়েছিল। আমল শেষে আপনার মনের যাবতীয় আশাগুলো পূরণের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।

আমল - ২

সময় - ১ দিন অথবা ৫ দিন।
এশার তারাবির নামাজের পর কিংবা তাহাজ্জুদ নামাজের পর এই আমল করতে হবে। প্রথমে সালাতুল হাজতের নিয়তে ২ রাকাত নফল নামাজ পড়তে হবে। এই নামাজে সুরা ফাতিহার পর সুরা ইখলাস ৩ বার করে পাঠ করে নামাজ শেষ করতে হবে। নামাজের পর-
১০০ বার আস্তাগফিরুল্লাহ রব্বি মিন কুল্লি যামবিঁও ওয়া আতুবু ইলাইহি পাঠ করতে হবে। এবং
দরুদে ইব্রাহিম ১০ বার পাঠ করতে হবে। 

উপরোক্ত নিয়ম মোট ৬ বার অনুসরণ করতে হবে। অর্থ্যাৎ আপনাকে ২ রাকাত করে ১২ রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে এবং ৬০০ বার আস্তাগফিরুল্লাহ রব্বি মিন কুল্লি যামবিঁও ওয়া আতুবু ইলাইহি পাঠ করতে হবে। এবং ৬০ বার দরুদে ইব্রাহিম পাঠ করতে হবে। আমল শেষে আপনার মনের যাবতীয় আশাগুলো পূরণের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।

আমল - ৩

সময় - ১ দিন অথবা ৩ দিন।
এশার তারাবির নামাজের পর কিংবা তাহাজ্জুদ নামাজের পর এই আমল করতে হবে। প্রথমে সালাতুল হাজতের নিয়তে ২ রাকাত নফল নামাজ পড়তে হবে। এই নামাজে সুরা ফাতিহার পর সুরা ইখলাস ৩ বার করে পাঠ করে নামাজ শেষ করতে হবে। নামাজের পর-
ইয়া আল্লাহু-ইয়া ওয়াহাবু-ইয়া রাজ্জাকু, ইয়া আল্লাহু-ইয়া ওয়াহাবু-ইয়া রাজ্জাকু, ইয়া আল্লাহু-ইয়া ওয়াহাবু-ইয়া রাজ্জাকু এইভাবে মোট ১০০ বার পাঠ করতে হবে। আমল শেষে আপনার মনের যাবতীয় আশাগুলো পূরণের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।

উপরোক্ত আমলের সাথে সাথে রমজানের প্রতিদিন এবং প্রতিরাতে  ‘আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নী’  পড়বেন। একদা হযরত আয়েশা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যদি জানতে পারি লাইলাতুল কদর কোনটি, তাহলে আমি সে রাতে কী বলব? তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আয়েশাকে বলেন, ‘তুমি বলো,
 ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧَّﻚَ ﻋَﻔُﻮٌّ ﺗُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻌَﻔْﻮَ ﻓَﺎﻋْﻒُ ﻋَﻨِّﻲ 
উচ্চারণঃ ‘আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নী’। 
অর্থঃ ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল। ক্ষমা করাটা আপনার পছন্দ। অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন।’ (সুনানে তিরমিজি: ৩৫১৩)। 
English Translation: Allahumma innaka Afuwwun Tuhibbul Afwa fa'fu Annee. 
English Meaning: O Allah You are the one who forgives greatly and loves to forgive, so forgive me.

সুতরাং সারাদিন-রাত বেশি বেশি এই দোয়া করবেন। এই দোয়াটি হাঁটা-চলা-শোয়া অবস্থায় করা যায়। শেষ দশকে বেশি বেশি পড়া উচিত।

0 Comments: