Headlines
Loading...
প্রতিদিনের নেক আমল সমূহ | Daily Dua Amal

প্রতিদিনের নেক আমল সমূহ | Daily Dua Amal

আল্লাহকে খুশি করার জন্য যে আমল করা হয় তাকেই নেক আমল বলা হয়। নেক আমলকারী ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা খুবই ভালোবাসেন। অনেক মানুষ আছেন যারা আরাম-আয়েশী জীবন যাপনের জন্য গাড়ি ক্রয় করে, বাংলো, বাড়ি অথবা অট্রালিকা বানায়। আবার রাতে ঘুমানোর জন্য ঔষধের সাহায্য নেয়। চিন্তমুক্ত জীবন, শান্তির ঘুম নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিয়ামত। আর এই নিয়ামত শুধুমাত্র আল্লাহর প্রিয় বান্দগণই লাভ করে থাকেন। আমাদের সকলেরই আশা যে, মৃত্যুর পর আমরা যেন কবরে আজাব মুক্ত থাকতে পারি এবং কিয়ামতের কঠিণ দিবসে নাজাতপ্রাপ্ত হয়ে চিরসুখের জান্নাত লাভ করতে পারি। যারা নিয়মিত এবং সময়মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পাশাপাশি নিচের আমলগুলো করবে তবে আশা করা যায় দয়াময় আল্লাহ তাআলা তাকে ইহকালেও সুখের জীবন এবং পরকালেও চির শান্তির জান্নাত দান করবেন।

আয়াতুল কুরসী

প্রতিদিন প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর ১ বার আয়াতুল কুরসী পাঠ করুন। প্রতিদিন সকালে ১বার এবং রাত্রে ঘুমানোর সময় ১ বার করে পাঠ করলে সারাদিন এবং সারারাত সমস্ত বালা মুসিবত থেকে নিরাপদে থাকা যায়। এই আমলের কারণে আল্লাহ তাআলা কাল কিয়ামতের দিন বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করার অনুমতি দিবেন। 

দরুদ শরীফ

প্রতিদিন সকালে ১০ বার এবং বিকেলে ১০ বার পাঠ করুন। যদি সম্ভব হয় দরুদে ইব্রাহিম পাঠ করুন। আর যদি দরুদে ইব্রাহিম মুখস্থ না থাকে তবে নিচের ছোট ছোট দরুদ শরীফ গুলোর মধ্য হতে যে কোন একটি পাঠ করতে পারেন। দরুদ শরীফ পাঠ করার সময় তাড়াহুড়ো করে পাঠ করবেন না। অবশ্যই কিছুটা সময় নিয়ে পাঠ করুন। 

আল্লাহুম্মা সল্লআলিা সাইয়্যদিনিা মুহাম্মদ।
আল্লাহুম্মা সল্লআলিা মুহাম্মদ ওয়া আলা আলি মুহাম্মদ।
আসসালাতু আসসালামু আলাইকুম ইয়া রাসুলুল্লাহ।

নবী মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ শরীফ পাঠ করবে আল্লাহ তা’আলা তার প্রতি দশবার রহমত বর্ষণ করবেন। নবী (সাঃ) আরো বলেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি সকালে ১০ বার এবং বিকেলে ১০ বার দরুদ শরীফ পাঠ করবে সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আমার শাফায়াত পাবে। খোদা তাআলার একদল ফেরেশতা আছে যারা দরুদ শরীফ পাঠকারীর নাম এবং পিতা-মাতার নামসহ আল্লাহর কাছে পেশ করে থাকেন। প্রতিবার দরুদ শরীফ পাঠ করলে নিচে উল্লেখিত ফজিলতগুলো লাভ হয়। 

১। দশটি গুনাহ ক্ষমা করা হয়।
২। দশটি রহমত লাভ হয়।
৩। দশটি মর্যাদা বৃদ্ধি হয়।
৪। ফেরেশতাগণ পাঠকারীর মাগফিরাতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকে।
৫। পাঠকারীর যাবতীয় সমস্যা ও দুশ্চিন্তা দূর হয়।

‘সুবহান আল্লাহ’

প্রতিদিন ১০০ বার পাঠকারীর জন্য ১০০০ সওয়াব লিখা হয় এবং ১০০০ গুনাহ মাফ করা হয়। সহীহ মুসলিম-৪/২০৭৩।

‘আলহামদুলিল্লাহ’

প্রতিদিন যতবার সম্ভব পাঠ করুন। এটি সর্বোত্তম দোআ। এই আমল মীযানের পাল্লাকে ভারী করে দেয়। তিরমিযী-৫/৪৬২।

‘সুবহান আল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লহু আল্লাহু আকবর’

প্রতিদিন যতবার সম্ভব পাঠ করুন। এই কালিমা আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় এবং নবী (সাঃ) বলেন, পৃথিবীর সমস্ত জিনিসের চাইতে আমার নিকট অধিক প্রিয়। সহীহ মুসলিম-৩/১৬৮৫, ৪/২০৭২।

‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী সুবহানাল্লাহিল আযীম’

প্রতিদিন ১০০ বার পাঠ করুন। আপনার যদি সমুদ্রের ফেনা পরিমান (সগীরা) গুনাহ থাকে তবুও পরম দয়ালু আল্লাহ তাআলা আপনাকে মাফ করে দিবেন। সহীহ মুসলিম-৪/২০৭১

‘সুবহানাল্লাহিল আযীমি ওয়া বিহামদিহী’ 

প্রতিদিন যতবার সম্ভব পাঠ করুন। প্রতিবার পাঠ করার জন্য জান্নাতে একটি করে (জান্নাতী) খেজুর গাছ রোপন করা হবে। সহীহ আত-তিরমিজী-৩/১৬০।

‘লা হাওলা ওয়ালা ক্যুয়াতা ইল্লাবিল্লাহ’

প্রতিদিন যতবার সম্ভব পাঠ করুন। নবী (সাঃ) বলেন, ইহা জান্নাতের গুপ্তধন সমুহের মধ্যে একটি গুপ্তধন। সহীহ আল-বুখারী-১১/২১৩, সহীহ মুসলিম-৪/২০৭৬।

لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ

লা-ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নিকুন্তু মিনাজ্জলিমিন। (সুরা আম্বিয়া, পারা-১৭, আয়াত-৮৭।)

অর্থঃ আপনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই। আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। অবশ্যই আমি পাপী। এই আয়াতকে দোয়া ইউনুস হিসাবে জানেন। এটি বিভিন্ন বালা-মুসিবত থেকে রক্ষার দোয়া।

ফজিলতঃ

হজরত নবী করিম (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হজরত ইউনুস (আঃ)-এর ভাষায় দোয়া করবে, সে যে সমস্যায়ই থাকুক আল্লাহতায়ালা তার ডাকে সাড়া দিবেন। তরমিজি শরীফ, হাদীস নং ৩৫০৫।

এক হাদিসে এসেছে, কোনো মুসলমান যদি অসুস্থ অবস্থায় এ আয়াতটি চল্লিশ বার পড়ে তাহলে ওই অসুখে সে মারা গেলে চল্লিশজন শহিদের সওয়াব পাবে। আর সুস্থ হয়ে গেলে তার যাবতীয় গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে। [হিসনে হাসিন-২৪১]

সুবহান আল্লাহ, ওয়াল হামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লালাহ, আল্লাহু আকবার।
সুবহান আল্লাহি ওয়া বিহামদিহি। আল্লাহর ফেরেশতাগণ এই বাক্য সর্বদাই পাঠ করে থাকেন। 
সকালে ১০০ বার এবং সন্ধ্যায় ১০০ বার পাঠ করুন। 

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ

লা-ইলাহা ইল্লালাহুলা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মূলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন ক্কদির। 

সকালে ১০০ বার এবং সন্ধ্যায় ১০০ বার। এটি ইবাদাত কবুলের আমল। এই আমলকারীর প্রতি আল্লাহ তাআলা দৃষিপাত করে থাকেন। এই আমলকারীর আমল নামায় ১০ জন গোলাম আজাদ করার সওয়াব লেখা হয়। ১০০টি নেকী লেখা হয়। ১০০টি গুনাহ মাফ করা হয়। এ ছাড়াও শয়তানের যাবতীয় চক্রান্ত থেকে মুক্ত থাকা যায়। 

লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু লাহুল মূলকু ওয়ালাহুল হামদু ইউহি ওয়া ইউমিত ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়্যিন ক্কদির। 

অর্থঃ আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয়, তার কোন শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসা তাঁরই, তিনি সব কিছুর উপরে সর্বশক্তিমান।

সকালে ১০ বার এবং সন্ধ্যায় ১০ বার পাঠ করুন। এই আমলের কারণে আমলকারীর আমল নামায় নিশ্চিত ১০টি নেকী লেখা হয়। এ ছাড়াও আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তির ১০টি গুনাহ মাফ করে দেন এবং ১০ জন গোলাম আজাদ করার সওয়াব তার আমল নামায় লিখে দেন।

লা-ইলাহা ইল্লালাহুলা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারীকালাহু ইলাহাও ওয়াহিদ। আহাদান ছমাদান লাম ইয়ালিদ তাখির ছহিবাতাও ওয়া ওয়ালাদ। ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।

দিনের বেলায় যে কোন সময় ১০ বার পাঠকারীর আমল নামায় ৪০ হাজার নেকী লেখা হয়। 

0 Comments: