আল্লাহ তাআলা মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য পবিত্র কুরআনে ঘোষনা করেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা, ধন-সম্পদ, ফসলের ক্ষতির মাধ্যমে পরীক্ষা করবো। আর আপনি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দিন। যারা তাদের উপর কোন বিপদ-আপদ আসে, তখন তারা বলে, নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চিতভাবেই তাঁর দিকেই ফিরে যাবো। (সুরা বাকারা, আয়াতঃ ১৫৫-১৫৬)। আমাদের প্রাণপ্রিয় নবীজী যখনই কোন কঠিণ বিপদে কিংবা সমস্যায় পড়তেন, তখনই একান্তভাবে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতেন। বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পবিত্র কুরআন ও হাদীসে অনেক দোয়া বর্ণনা করা হয়েছে। অধিকাংশ দোয়াই ছোট এবং খুব সহজেই মুখস্ত করা যায়।
বৈধ যে কোন ইচ্ছে বা প্রয়োজন পূরণের জন্য আল্লাহ তাআলার সন্তষ্টির উদ্দেশ্যে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করাকে সালাতুল হাজত বলে। হযরত হুজাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে যখন কোন বিপদাপদ চলে আসতো তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন। (আবু দাউদ)।
যে কোন কিছুর প্রয়োজন হলে বা শারীরিক-মানষিকভাবে কোন রকম দুশ্চিন্তা দেখা দিলে এ নামাজ পড়লে আল্লাহ তাআলা বান্দার যে কোন ইচ্ছাকে পূরণ করে দেন। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবায়ে কেরামকে এ নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সালাতুল হাজত নামাজ বা ইচ্ছা পূরণের নামাজ যে কোন সময়ে পড়া যায়। তবে সূর্য উদিত হওয়ার সময়, সূর্য যখন ঠিক মাথার ওপর থাকে তখন এবং সূর্য ডোবার সময়ে এই নামাজ পড়া যাবে না। কারণ এই তিনটি সময় নামাজের জন্য নিষিদ্ধ সময়।
কিভাবে পড়বেন?
হাজত নামাজের নিয়ত করে নিন। প্রথম রাকাতে সুরা ফাতিহার পর ১০ বার সুরা কাফিরুন পাঠ করুন। দ্বিতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার পর ১১ বার সুরা ইখলাস পাঠ করুন। সালাম ফিরিয়ে সিজদায় যান এবং প্রথমে দরুদশরীফ পাঠ করুন। তারপর পাঠ করুন,
“লা-ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াহদাহু লা-শারীকা লাহু। লাহুল মূলকু। ওয়ালাহুল হামদু। ইউহি ওয়া ইউমিত বিয়াদিহিল খইর। ওয়া হুয়াআলা কুল্লি শাইয়িন ক্কদির”।
এরপর, “রব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানা ওয়াফিল আখিরতি হাসানা ওয়াক্কিনা আজাবান্নার” পাঠ করুন। এবার, সিজদাতে থাকা অবস্থাতেই আপনার যত রকমের বিপদ আছে তা থেকে মুক্তির জন্য কিংবা মনে যত রকমের নেক ইচ্ছা আছে বা নেক হাজত আছে সেটা পূরণ করে দেওয়ার জন্য কান্নাকাটি করে এবং ইসমে আজম পাঠ করে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।
মনে রাখবেন, দোয়া কবুলের জন্য হালাল উপার্জন খাওয়া, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সময় মতো এবং যতটা সম্ভব মসজিদে গিয়ে আদায় করা, মা-বাবার খেদমত করা, পরোপকারী হওয়া এবং খোদার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসী হতে হবে এবং মনে এটাও বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আল্লাহ আপনার দোয়া কবুল করেছেন। দয়াময় আল্লাহ আমাদের সালাতুল হাজত নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন এবং সকলের নেক ইচ্ছাগুলোকে পূরণ করে দিন। আমীন।
0 Comments: