Headlines
Loading...
আমল বিনষ্টকারী কাজ | Amol Binostokari Kaj | আমল যে কারণে নষ্ট হয়

আমল বিনষ্টকারী কাজ | Amol Binostokari Kaj | আমল যে কারণে নষ্ট হয়

দুনিয়ার নানা বহুমুখী ব্যস্ততার সাথে আমাদের শারীরিক দূর্বলতা, অসুস্থতা, অলসতা ইত্যাদি কারণে আমরা খুব কমই আমল করতে পারি। তা সত্বেও আমরা আমাদের সামান্য কিছু দান, সাদাকা, আমল দ্বারা কাল কিয়ামতে নাজাতের আশা করে থাকি। কিন্তু কিছু কারণে আমরা যদি কিয়ামতের দিন এর ভালো ফলাফল না পাই তা’হলে এর চেয়ে আর দূর্ভাগ্য কিছুই হতে পারে না। 

কিছু বিষয় আছে যেগুলো আমাদের কর্মের সাথে জড়িত থাকলে কোন আমলই কবুল হবে না। আপনি হজ্জ করেছেন, মসজিদ-মাদ্রাসায় দান করেছেন, এতিম এবং আলেমদের খাইয়েছেন, আপনার এই আমলগুলো হয়তো কবুল হয়ে গেছে। কিন্তু আপনি একটা নেক আমল করেছেন আর এর ভিতর যদি আপনার অহংকার থাকে, আত্ব-গরিমা থাকে, বিষয়টি লোক দেখানো এবং এর থেকে আপনি প্রশংসার আশা করছেন কিংবা নিজেকে নেককার মনে করছেন তবে আপনার এই ভালো কাজ বা আমল কবুল হবার কোন সম্ভাবনাই নেই।

আমাদের ভালো কাজ, নেক কাজ কিংবা আমল নষ্ট হবার যতগুলো কারণ আছে তার মধ্যে শিরক করা এবং শিরকের সাথে কুফর করা অন্যতম কারণ। “নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শিরক করাকে ক্ষমা করেন না। উহা ব্যতিরেকে উহার নিচের পর্যায়ের সব পাপ তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন”। সুরা নিসা, আয়াত-১১৬। আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, “নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি শিরক করবে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দিবেন, আর তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম, আর এই সমস্ত জালিদের জন্য কোন সাহায্যকারী থাকবে না”। সুরা মায়েদাহ, আয়াত-৭২। 

পবিত্র কুরআনের তিন ভাগের এক ভাগই শিরক এবং কুফর নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাই আমাদের সকলেরই শিরক এবং কুফর সম্পর্কে খুব বেশী সচেতন হওয়া দরকার। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনুল কারিমের অনেক জায়গায় শিরক এবং কুফর বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তার ভিতরে সুরা জুমা’র এক জায়গায় বলেছেন “হে রাসুল! আপনার কাছে ওহি পাঠানো হয়েছে এবং আপনার পূর্বে সকল নবীগণকে শিরক এবং কুফর সম্পর্কে ওহি করে জানানো হয়েছিল, যদি কেউ শিরক করে তবে তার জীবনের সকল কর্ম বরবাদ হয়ে যাবে, মুছে যাবে এবং সে ধ্বংশ হয়ে যাবে”।

শিরক অর্থ হলো আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা, কাউকে কোন ব্যাপারে আল্লাহর মতো মনে করা অথবা আল্লাহর যেটা পাওনা তাকে সেটা দেওয়া। যেমন- আল্লাহ ছাড়া কেউ মনের কথা জানেন, গায়েবী জানেন, আল্লাহ ছাড়া কেউ মানুষকে উপকার করতে জানেন। আল্লাহ এবং বান্দার মাঝে কোন মধ্যস্থ আছে যার মাধ্যম ছাড়া আল্লাহর কাছে যাওয়া যায় না। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উপর নির্ভর করা, আল্লাহ ছাড়া কাউকে সিজদা করা, আল্লাহ ছাড়া কারো নামে জবাই করা ইত্যাদি শিরকের অন্তর্ভূক্ত। বিপদে পড়ে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকতে থাকা এটাও শিরক। 

অন্যদিকে আল্লাহর কোন বিধানকে অস্বীকার করা বা মেনে নিতে না চাওয়াই হলো “কুফর”। যেমন- আল্লাহ তাআলা যেটাকে ফরজ করেছেন সেটাকে ফরজ মনে না করা। আল্লাহ তাআলা নামাজ পড়তে বলেছেন, রোজা রাখতে বলেছেন, হজ্জ করতে বলেছেন, যাকাত দিতে বলেছেন, পর্দা করতে বলেছেন ইত্যাদি। এখন কেউ যদি এগুলো পালন না করেন তবে তিনি এর জন্য গোনাহগার হবেন, তবে হয়তো ঈমানটা থেকে যেতে পারে। 

হাদীসে স্পষ্ট আছে এমন কোন বিধানকে অপালনযোগ্য মনে করা, অচল মনে করা, উপহাস করা এগুলোকে “কুফর” বলা হয়। যেমন- নামাজের জন্য অজু করার কি দরকার, শীতের সময়ে ফজরের নামাজ সকাল ৯টা বা ১০টায় হলে ভালো হতো এমন রকম চিন্তা-ভাবনাও কুফরের অন্তর্ভূক্ত। যে কোন ব্যাপারে দ্বীনের কোন বিষয়ে উপহাস করাই কুফর। 

শিরক এবং কুফর ছাড়াও আমাদের সমাজে আরেকটি ব্যাধি হল কাউকে উপকারের বিনিময়ে খোঁটাদেয়া। ইসলামের দৃষ্টিতে খোঁটাদেয়া জঘন্যতম অন্যায় কাজ। আপনার যদি খোঁটাদেয়ার অভ্যাস থেকে থাকে তবে এখনই সাবধান হয়ে যান। নয়তো এতদিনে যা কিছু আমল করার বিনিময়ে সওয়াব অর্জন করেছেন তার সবটাই বরবাদ হয়ে যাবে। এমনও হতে পারে যে, আপনার আমল নামায় কিছুই নেই। আপনার আমলনামা “শূণ্য” অথবা গোনাহ দিয়ে ভরে গেছে। 

আমরা যখন মানুষের কোন উপকার করতে পারি তখন বুঝতে হবে এটা আপনার প্রতি আল্লাহ তাআলার মহান দয়া। প্রকৃত মোমিনের হৃদয়ে এটা সব সময় থাকতে হবে যে, সে যতবেশী মানুষের উপকার করুক না কেন তার জন্য প্রতিদান হিসাবে ধন্যবাদ টুকুও আশা করা যাবে না। পক্ষান্তরে আপনি যার উপকার করেছেন সেই ব্যক্তি যদি আপনার উপকারের কথা ভূলে গিয়ে আপনার প্রতি রুঢ় আচরণ করে, আপনার বিরুদ্ধে কথা বলে তবে আপনি ভূল করেও তার প্রতি যে উপকার করেছিলেন তা বলবেন না। বস্তুতঃ এমনটি হতে দেখা যায় না। আপনি যার উপকার করেছেন সে যদি কোন কারণে আপনার বিপক্ষে যায় বা বিরুদ্ধে কথা বলে তখন আপনি আমি বলে উঠি তোমাকে তো অমুক বিপদে আমি সাহায্য করেছিলাম আর আজ তুমি আমার বিরুদ্ধে কথা বলছো? মূলত আপনি আমি কাউকে সাহায্য করতে পারি না। আল্লাহ তাআলাই আমাদের এমন ভালো কাজের জন্য সাহায্য করে থাকেন যাতে করে আমরা নেকী অর্জন করতে পারি।

কোন মানুষ বিপদে পড়েছে আর আপনি চাইলে তাকে সেই বিপদে তাকে সাহায্য করতে পারেন তবে অবশ্যই তাকে সাহায্য করুন আর খোদার কাছে এই বলে শুকরিয়া আদায় করুন যে, হে আল্লাহ! তোমার দরবারে কোটি কোটি বার শুকরিয়া জানাচ্ছি যে, তোমার অমুক বান্দাকে সাহায্য করার জন্য তুমি আমাকে নির্বাচন করেছো।

প্রকৃতপক্ষে আপনি আমি আল্লাহর অনুগ্রহ ছাড়া এক ইঞ্চি জায়গা অতিক্রমে সক্ষম নই। সেই আপনি কিংবা আমি কিভাবে অহংকার করতে পারি? অহংকার করার মালিক পৃথিবীতে একজনই আছেন, আর তিনি আমাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ। 

আপনার বাড়ির দরজায় যদি কোন ভিক্ষুক বা অন্য কেউ সাহায্যের জন্য আসে তবে তাকে মোটেও অবহেলা করবেন না। পারতপক্ষে তাকে আপনার সাধ্যমতো সাহায্য করুন। কারণ আল্লাহ আপনাকে এই নেয়ামত দান করেছেন যে, ঐ ব্যক্তিকে আপনার মুখাপেক্ষী করে পাঠিয়েছেন। অথচ আল্লাহ তাআলা এত বড়, এত মহান যে, আমরা প্রতিনিয়ত তারই অনুগ্রহপ্রার্থী। আল্লাহ তাআলা আপনাকে, আমাকে অনেক বেশী ভালোবাসেন, প্রতিনিয়ত দয়া করে থাকেন যাতে করে আমরা বেশী বেশী ভালো কাজ করে সওয়াব অর্জন করতে পারি। আল্লাহ তাআলা আমাদের অনেক ভালোবেসে সৃষ্টি করে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন শুধু তারই ইবাদত করার জন্য। আর আমরা দুনিয়ার জীবনে কিছুদিন থাকার পর আবার তাঁর কাছেই ফিরে যাবো এবং কিয়ামত দিবসে দুনিয়াতে কৃত যাবতীয় ভালো কাজের জন্য পুরস্কৃত হবো। আমাদের জন্য সর্বোচ্চ পুরস্কার হবে চির শান্তির “জান্নাত” যেখানে আমরা অনন্ত জীবন থাকবো। 

বর্তমান সময়ে কিছু বাহিনী আছে যাদের অনেকেই অশোভন আচরণ তথা রুঢ় আচরণ করাকে স্মার্টনেস বা আর্ট মনে করে থাকেন। অশোভন আচরণ মূলত কঠিণ গোনাহ এবং এই আচরণ পূর্ববর্তি সকল ভালো আমলগুলোকে ধ্বংশ করে দেয়। যুবকদের মধ্যে এই আচরণ খুব বেশী প্রকাশ পায়। অথচ যুবক বয়সের ইবাদত খোদার কাছে খুবই প্রিয়। আমাদের জনসংখ্যার একটা বিরাট অংশই যুবক যাদের মধ্যে অনেকেই রাজনীতি করে থাকেন এবং কোন রাজনৈতিক বক্তৃতাকালীন সময়ে দম্ভ প্রকাশের সাথে সাথে অশোভন কথাবার্তা বলে থাকেন। অনেকেই আবার এমন বর্তৃতাকারীকে বাহাবা দিয়ে থাকেন। এমন ধরণের কাজ মূলত কঠিণ গুনাহের কাজ যা ভালো কাজ এবং আমলকে ধ্বংশ করে দেয়। তবে তাদের চেয়েও আমরা যারা দ্বীনদার বলে মনে করে দ্বীন পালন করি তারাও অশোভন আচরণ করে থাকি। অর্থ্যাৎ কর্কস ভাষায় কথা বলা, রেগে গালি দেওয়া ইত্যাদি অশোভন আচরণ যা নেক আমলকে ধ্বংশ করে দেয় বলে হাদীস শরীফে এসেছে। 

শুক্রবার দিন জুমা’র নামাজে মসজিদে জায়গা পাওয়া যায় না। আবার আসর থেকে এশা পর্যন্ত নামাজি ব্যক্তির সংখ্যা ক্রমাগত কমতেই থাকে। আসরের ফরজ নামাজ শেষ হবার সাথে কেউ একজন বলে থাকেন দোয়ার পর “ঈমান ও আমল” নিয়ে আলোচনা হবে আপনারা সবাই উপস্থিত থাকার চেষ্টা করবেন। যারা আলোচনায় উপস্থিত থাকেন তাদের একটি দল মসজিদ থেকে বের হয়ে আশে-পাশের মুসলিম বাড়িগুলোতে যান এবং সেই বাড়ির পুরুষ মানুষগুলোকে দ্বীনের বিষয়ে বুঝাতে থাকেন এবং মাগরিব নামাজে উপস্থিত হবার দাওয়াত দিয়ে আসেন। 

বায়ান্ন সপ্তাহে এক বছর হয়। সেই হিসাবে প্রতি শুক্রবার যে দলটি মসজিদ থেকে বের হয়ে আশে-পাশের বাড়িগুলোতে যান তারা যদি ২০ জন মানুষকে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন এবং তাদের মধ্যে যদি ১০ জনও নামাজি হন তাহলে বছর শেষে ১০X৫২ = ৫২০ জন নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজি হবার কথা। কিন্তু পাড়া বা মহল্লায় একটি মসজিদে প্রতি ওয়াক্তে কতজন নামাজি ব্যক্তি পাওয়া যায়? অধিকাংশ সময়ই দুই থেকে তিন কাতার পর্যন্ত মুসল্লির উপস্থিতি পাওয়া যায় না অথচ উপরোক্ত হিসাবে মসজিদে জায়গা থাকার কথা নয়। শীতের সময় আসলে দেখা যায় প্রতিটি পাড়া মহল্লায় ইসলামী জলসা’র আয়োজন করা হয় যেখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং ঈমান ও আমল নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়। এসব জলসায় আশপাশের মানুষের চাইতে মাদ্রাসার ছাত্রদেরই বেশী উপস্থিতি দেখা যায়। তা সত্বেও মসজিদের অধিকাংশ কাতার ফাঁকা থাকতেই দেখা যায়। আমাদের ঈমান ও আমল কোন পর্যায়ে আছে সেটা বোধকরি প্রত্যেকেরই একবার ভাবা দরকার। আমরা সারাটা দিন যেভাবে অতিবাহিত করি তাতে করে আমাদের নেকীর পাল্লা ভারী হচ্ছে না গোনাহর পাল্লা ভারী হচ্ছে সেটাও ভাবা দরকার।

হাদীস শরীফে এসেছে কিয়ামতের দিন প্রথমেই যে মানুষগুলোর হিসাব করা হবে তার মধ্যে একজন থাকবেন কুরআনের বড় আলেম। আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তিকে বলবেন, আমি তো তোমাকে অনেক মেধা, জ্ঞান, বুদ্ধি দিয়েছিলাম। তুমি এই মেধা, বুদ্ধি দিয়ে কি করেছো? ঐ আলেম ব্যক্তি বলবেন, আমি কুরআন শিখেছি, মানুষকে ইসলামের পথে দাওয়াত দিয়েছি, মানুষকে কল্যাণের কথা বলেছি। আমি দ্বীনের জন্য অনেক কষ্ট করেছি। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন না তুমি তো আমার দ্বীনের জন্য করোনি। তোমাকে লোকে প্রশংসা করবে, তুমি জনসমাজে নন্দিত হবে তুমি তো এই জন্য তা করেছো। মানুষের কাছে সুনামের ইচ্ছা নিয়েই তুমি এই কাজ করেছিলে। কাজেই আমার কাছে আজ আর তোমার কোন পাওনা নেই। মানুষের কাছ থেকে তোমার যা পাওনা তুমি তো দুনিয়াতে সেটা পেয়ে গেছো। আর আমার কাছে তোমার জন্য জাহান্নাম ছাড়া কিছুই নেই। কাজেই তুমি জাহান্নামে যাও। 

এরপর একজন দানবীরকে ডেকে নিয়ে আসা হবে এবং আল্লাহ তাকে বলবেন আমি তো তোমাকে অনেক সম্পদ, মেধা, জ্ঞান, বুদ্ধি দিয়েছিলাম। তুমি এই সম্পদ, মেধা, বুদ্ধি দিয়ে কি করেছো? তখন সেই ব্যক্তি বলবে হে আল্লাহ আমি তো আপনার দ্বীনের জন্য অনেক মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা বানিয়েছি, বড় বড় গরু কোরবানী দিয়েছি, গরীব-দুখীদের দান করেছি। সকল রকম কল্যাণ কাজে আমি কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছি। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন না তুমি তো আমার জন্য করোনি। তোমাকে লোকে দানবীর বলবে, বাহাবা দিবে, তোমার নামে জিন্দাবাদ দিবে এই জন্য তুমি তা করেছো। আর দুনিয়াতে তুমি সেটা পেয়েছো। আজ আর আমার কাছে তোমার কিছুই পাওনা নেই। কাজেই তোমার জন্য রয়েছে জাহান্নাম। তুমি জাহান্নামে যাও। 

অনুরুপভাবে আরেকজনকে ডেকে নিয়ে আসা হবে যিনি ছিলেন একজন বীরযোদ্ধা। যিনি আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাকে বলবেন তোমাকে আমি শক্তি দিয়েছিলাম, সাহস দিয়েছিলাম, সুস্থতা দিয়েছিলাম। তুমি আমার জন্য কি করেছো? তখন ঐ ব্যক্তি বলবে আমি আপনার রাস্তায় মুসলিম রাষ্ট্রের হেফাজতের জন্য কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলাম এবং শহীদ হয়েছিলাম। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন তুমি তো এটা আমার জন্য করোনি, লোকে তোমাকে বীর বলবে, তোমার প্রশংসা করবে তুমি তো এই জন্যই সেটা করেছো। আর দুনিয়ার জীবনে তুমি তো সেটা পেয়েছো। তুমি তো দুনিয়ার জীবনে আমার কোন প্রশংসা করোনি। কাজেই আজ আর আমার কাছে তোমার কিছুই পাওনা নেই। কাজেই তোমার জন্য রয়েছে জাহান্নাম। তুমি জাহান্নামে যাও। 

মানুষ হিসাবে আমরা অতিরিক্ত অহংকার করে থাকি। অথচ অহংকার করা শুধু আল্লাহর জন্যই সাজে। আল্লাহ তাআলা এক এবং অদ্বীতিয়। তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি চিরঞ্জিব, চির স্থায়ী। আর আমরা আল্লাহর সৃষ্টি। আমরা মরণশীল এবং এক সময় আমরা সকলেই মরে যাব এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবো এবং দুনিয়াতে কৃতকাজের জন্য তাঁর কাছে জবাবদীহি করবো। আমরা যদি প্রকৃত নামাজি, ঈমানদার, আমলকারী না হই তবে আমাদের নাজাতের সম্ভাবনা কতটুকু? 

ইসলামের মূল চেতনা হলো আখিরাত মুখিতা। কাজেই আমরা সকলেই এব্যপারে সচেতন হই। আমাদের প্রতিটি কাজ বিশেষ করে যে কোন সামাজিক কাজ যেমন-টাকা পয়সা দান করা, সহযোগিতা করা, মানুষের উপকার করা, যাকাত দেওয়া এগুলো সব যেন একমাত্র আল্লাহর সন্তষ্টির জন্যই হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। দেখুন, শয়তানের কাজ হলো মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলা, আর তাকে জাহান্নামী বানানোর জন্য যে কোন ফাঁদে ফেলা। যখন নামাজের সময় হয় তখন দেখবেন শয়তান আপনাকে বলছে আজ আর মসজিদে যাবার দরকার নেই। এটা রিয়া (লোক দেখানো ইবাদত) হয়ে যাবে। কাজেই আজ একা একা বাসাতেই নামাজ পড়লে চলবে। যদি এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় তাহলে আল্লাহর কাছে পানাহ চান আর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে মসজিদেই পড়ার দৃঢ় চেষ্টা করুন। যে সমস্ত বদগুণের কারণে আপনার আমল নষ্ঠ হয়ে যায় বরবাদ হয়ে যায় তা’হতে বাঁচার চেষ্টা করুন। দয়াময় আল্লাহ আমাদের সকলকে এই তৌফিক দান করুন। আমীন। 

0 Comments: