Headlines
Loading...
দোয়া কবুলের নিয়ম | How to make dua bangla

দোয়া কবুলের নিয়ম | How to make dua bangla

দোয়া বা আমল এমন একটি ইবাদত যার মাধ্যমে আল্লাহর সাথে বান্দার গভীর সম্পর্ক তৈরী হয় এবং আল্লাহ তা’আলা খুশি হয়ে বান্দার মনের সকল নেক ইচ্ছেগুলো পূরণ করে দেন। কিন্তু আমরা নফসের ধোকা এবং শয়তানের ধোকায় পরে দু’একদিন আমল করার পর আমল ছেড়ে দেই। যার ফলে আমাদের দোয়া বা আমল কবুল হয় না। 

প্রতিটি দোয়া বা আমল কবুলের জন্য কিছু নিয়ম পালন করতে হয়। দোয়া কবুলের জন্য দোয়ার শুরুতে এবং শেষে কয়েকবার দরুদশরীফ পাঠ করা উচিত। যে দোয়ায় দরুদশরীফ পাঠ করা হয় না সে দোয়া পৃথিবী এবং আল্লাহর আরশের মাঝ বরাবর ঝুলে থাকে। তাই দোয়া কবুলের জন্য তথা দোয়া খোদার আরশে পৌঁছার জন্য দরুদশরীফ পাঠ অতীব জরুরী। তারপর কয়েকটি ইসমে আজম পাঠ করা ভালো। কারণ যে দোয়াতে দরুদশরীফ এবং ইসমে আজম পাঠ করা হয় সে দোয়া কবুলের সম্ভাবনা অধিক। আপনার প্রতি দোয়াতে “ইয়া জাল-জালালি ওয়াল ইকরম” বাধ্যতামূলক করে নিবেন। কারণ এটি একটি ইসমে আজম। এছাড়াও আরো অনেক ইসমে আজম আছে। যেমনঃ

وَإِلَٰهُكُمْ إِلَٰهٌ وَاحِدٌ ۖ لَّا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ

১। ওয়া ইলা-হুকুম ইলাহু ওয়াহিদ, লা-ইলাহা ইল্লা হুওয়ার রহমানুর রহিম।

২। আলিফ-লাম-মীম। আল্লাহু লা-ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম।

৩। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্নী আশহাদুকা আন্নাকা আন্তাল্লাহু লা-ইলাহা ইল্লা আন্তাল আহাদুস সমাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ। ওয়ালাম ইয়া কুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।

৪। লা-ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ্জলিমিন।

৫। ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম বিরহমাতিকা আস্তাগিস।

৬। আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্না লাকাদ হামদ। লা-ইলাহা ইল্লা আংতাল মান্নান। বাদিয়্যুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ। ইয়া জাল-জালালি ওয়াল ইকরম। ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম।

আপনার প্রতি দোয়াতে নিজের গোনাহ মাফের জন্য দোয়া করবেন তারপর অন্যের জন্য দোয়া করবেন। আপনি যখন অন্যের জন্য দোয়া করতে থাকেন তখন ফেরশতাগণ আপনার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকে। 

আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নামের মধ্যে এমন কিছু নাম আছে যে নামগুলো পাঠ করে দোয়া করলে আল্লাহ তা’আলা খুব দ্রুত দোয়া কবুল করে থাকেন। যেমনঃ ইয়া আল্লাহু, ইয়া রহমানু, ইয়া রহিমু,ইয়া গফুর, ইয়া গফ্ফার, ইয়া জাব্বার, ইয়া ছাত্তার, ইয়া হাইয়্যু, ইয়া কাইয়্যুম, ইয়া জাল-জালালি ওয়াল ইকরম। বদরের যুদ্ধের ময়দানে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর কাছ থেকে সাহায্য পাবার জন্য বার বার “ ইয়া হাইয়্যু, ইয়া কাইয়্যুম” নাম দ্বারা আল্লাকে ডেকেছিলেন। 

তবে দোয়া কবুল হওয়ার কয়েকটি শর্ত আছে। আপনি যতই ইবাদত বা আমল করেন না কেন আপনি যদি মনে প্রাণে বিশ্বাসী না হয়ে থাকেন তবে আপনার দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। 

দোয়ার আদব সমুহঃ

সর্বশক্তিমান আল্লাহ সর্বদাই পূতপবিত্র এবং তিনি পরিবত্রতা ভালোবাসেন। এজন্য ওযু থাকা অবস্থায় কিংবা পবিত্রতা অর্জন করে তথা ওযু করে দোয়া করা উচিত। 

কিভাবে বসবেন এবং হাত তুলবেন?

আপনি নামাজে বৈঠকে যেভাবে বসেন ঠিক সেইভাবে বসবেন। এবার মুনাজাতের জন্য আপনি আপনার হাত দুটো সিনা বরাবর উঠাবেন। 

দোয়ার শেষে কি বলবেন?

আলহামদুলিল্লাহহি রব্বিল আলামিন। ওয়াস সালাতু ওয়াস সালামু আলা সাইয়্যিদিল আম্বিয়া’ই ওয়ার মুরসালিন। ওয়া আলা আলিহি ওয়া আসহাবিহি আজমাইন।

দোয়া কবুলের শর্তঃ

  • হালাল খাবার খাওয়া
  • মিথ্যা কথা না বলা
  • নিয়মিত নামাজ আদায় করা
  • মনেপ্রাণে বিশ্বাসী হওয়া
  • পরোপকারী হওয়া
  • শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে চাওয়া

দোয়া কবুলের সময়ঃ

  • আরাফার ময়দানে
  • সফর অবস্থায়
  • ইফতারের পূর্ব মুহুর্তে
  • রাতের শেষ তৃতীয়াংশে
  • আজান ও ইকামতের মাঝে
  • লাইলাতুল কদরে
  • বিপদের সময়
  • বৃষ্টির নীচে দাঁড়িয়ে
  • যে কোন নেক কাজ করার পর যেমন-নামাজ শেষে, কুরআন তিলাওয়াত শেষে এবং দান করার সময় দোয়া কবুল হয়।

দোয়া করার উপকারিতাঃ

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের জন্য দোয়া করা ইসলামী জীবন অনুশীলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং আমাদের শারীরিক, মানষিক এবং আধ্যাত্মিক সুস্থ্যতার জন্য অনেক উপকারী হতে পারে।

ঈমান মজবুত করাঃ নিয়মিত দোয়া করা আমাদের ঈমানকে মজবুত করে এবং আল্লাহর সাথে আমাদের সংযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। 

বর্ধিত মননশীলতাঃ একজন মুসলিম ব্যক্তি মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন যে দোয়া করলে যে কোন কাজ এবং উদ্দেশ্য সফল হয়। 

ক্ষতি থেকে সুরক্ষাঃ দোয়া করার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায় ফলে আমরা ক্ষতি হতে রক্ষা পেতে পারি।

দুশ্চিন্তা ও চাপের উপশমঃ দোয়া করার পর মনে প্রাণে শান্তির অনুভূতি হয় ফলে মানষিক চাপের উপশম হয়।

সম্পর্ক মজবুত করাঃ আমরা আমাদের প্রিয়জনদের মঙ্গল ও সাফল্যের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে থাকি। ফলে একে অন্যের সাথে সম্পর্ক অনেক মজবুত হয়।

0 Comments: