Headlines
Loading...
What are the benefits of Salah? | নামাজের উপকারিতা কি?

What are the benefits of Salah? | নামাজের উপকারিতা কি?

সকল শান্তির মূল হলো নামাজ। আপনি যদি আপনার দিনটি নামাজের মাধ্যমে শুরু করেন তাহলে দয়াময় আল্লাহ আপনাকে সারাদিন সমস্ত বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করবেন। প্রতি ওয়াক্ত নামাজেরই অগনিত উপকারিতা আছে। নামাজ হলো ধ্যানের একটি সর্বোৎকৃষ্ট রুপ যেখানে বান্দা তার খোদার প্রতি গভীর মনোনিবেশ করেন। নামাজ বিষন্নতা থেকে মুক্তি দেয় এবং মনের শান্তি গঠণ করে যা শেষ পর্যন্ত রোগ প্রতিরোধ করে। নামাজ শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরী পোড়ায় এবং স্থুলতা প্রতিরোধ করে। এটি শরীরের আ্যানাবলিক এবং ক্যাটাবলিক জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখে। নামাজ আদায়ের অনেক উপকার আছে। যেমন আধ্যাতিক, ধর্মীয়, শারীরিক, মানষিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ইত্যাদি। নামাজ পড়লে মন ও আত্বা শিথিল হয়। 

ফজরের নামাজের উপকারিতাঃ ভোরবেলা ফেরেশতারা আল্লাহর হুকুমে পৃথিবীতে নেমে আসেন এবং ফজরের নামাজ পড়া ব্যক্তিদেরকে প্রত্যক্ষ করে থাকেন। তাই প্রত্যেক ঈমানদার মুসলিম ভাই-বোনদের ফজরের নামাজ পড়া অত্যন্ত জরুরী। কারণ ফজরের নামাজ জাহান্নাম থেকে রক্ষা করে। হাদিসে উল্লেখ আছে, যে ব্যক্তি সূর্য উদয়ের পূর্বে ফজরের সালাত আদায় করবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। 

যোহরের নামাজের উপকারিতাঃ হাদিসে উল্লেখ আছে, যোহরের সময় বেহেস্তের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। এই সময় সালাত আদায়কারী ব্যক্তির উপর আল্লাহ তা’আলার রহমত বর্ষিত হয়। যোহরের নামাজ পড়লে আল্লাহ তা’আলা নামাজ আদায়কারী ব্যক্তির উপর সন্তষ্ট হন এবং শেষ বিচারের দিন আল্লাহ তার বান্দাকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন।

আসরের নামাজের উপকারিতাঃ আসরের নামাজের গুরুত্ব ও উপকারিতা সম্পর্কে অনেক হাদিস রয়েছে। আসরের নামাজ না পড়লে ব্যক্তির সব নেক আমল বাতিল হয়ে যায় এবং ঐ ব্যক্তির সমস্ত সম্পদ কেড়ে নেওয়া হয়। তাই সম্পদ বৃদ্ধির জন্য আসরের নামাজ আদায় করা জরুরী। আসরের নামাজ আদায়কারী ব্যক্তিকে আল্লাহ তা’আলা দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা দান করবেন। 

মাগরিবের নামাজের উপকারিতাঃ মাগরিবের নামাজ পাঠকারী ব্যক্তির উপর আল্লাহ তার সমস্ত নিয়ামত ও পুরস্কার বর্ষণ করেন। এ সময় নামাজ পাঠকারী ব্যক্তির সকল দোয়া ও ইচ্ছা আল্লাহ তা’আলা পূরণ করে থাকেন, সম্পদ ও পরিবারে সফলতা দান করে থাকেন। 

এশা’র নামাজের উপকারিতাঃ আপনি যদি এশা’র নামাজ আদায় করেন তা’হলে আল্লাহ আপনাকে অর্ধেক রাত ইবাদত করার পুরস্কার দিবেন। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার জন্য একটি মহান আশীর্বাদ। তাই কখনই এশার নামাজ আদায়ে মিস করবেন না। এই নামাজ যেহেতু দিনের শেষ নামাজ তাই ঘুমের আগে এই নামাজ পড়ে নিন। এই নামাজের পর বেশী বেশী দু’আ করার চেষ্টা করুন। কারণ আল্লাহ আপনার দোয়া শুনবেন এবং আপনার উপর তাঁর রহমত ও বরকত বর্ষণ করবেন। 

নামাজের অন্যান্য উপকারিতা সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো-

নামাজ ফরজ ইবাদত। অথচ এই ফরজ ইবাদত পালনে ইহকাল ও পরকালে বহুমুখী কল্যাণ বয়ে আনে। নামাজ মানুষকে অন্যায়, পাপ ও অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখে। আল্লাহতাআলা পবিত্র কোরআনুল কারিমে নামাজ সম্পর্কে প্রায় ১০৯টি আয়াত অবতীর্ণ করেছেন যা থেকে নামাজের তাৎপর্য উপলব্ধি করা যায়। আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে। (সূরা আনকাবুত-৪৫)। এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও প্রতিটি জুমার নামাজ আদায় করে এবং প্রতি বছর রমজানের রোজাগুলো যথাযথভাবে পালন করে, তাকে আল্লাহতায়ালা এক নামাজ হতে অপর নামাজ, এক জুমা হতে অপর জুমা এবং এক রমজান হতে অপর রমজানের মধ্যকার সময়ে সংঘটিত যাবতীয় গোনাহ ক্ষমা করে দেন। তবে শর্ত হলো, তাকে কবিরা গোনাহ থেকে বিরত থাকতে হবে।’

সুস্থতা অর্জনঃ একজন ঈমানদার ব্যক্তি আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন তথা পরকালে নাজাত পেতে এবং চির শান্তির জীবন লাভ করতে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকেন। নামাজ আদায়ের আগে ওযু করতে হয়। ওযুতে দাঁত পরিস্কার করা, নাকে পানি দেয়া, কুলি করা, হাত, পা, মাথা, মুখমন্ডল ধৌত করতে হয় ফলে শরীর ধুলো-বালি ও জীবাণু মুক্ত হয়। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে ওজু করার ফলে একজন নামাজি ব্যক্তির শরীর দিনভর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকে আর এ জন্য সে রোগমুক্ত থাকতে পারে। 

মনোযোগ বৃদ্ধিঃ আমরা যখন নামাজে দাঁড়াই তখন আমাদের চোখ সিজদার জায়গায় স্থির থাকে। এ কারণে আমাদের একাগ্রতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।

মানষিক প্রশান্তিঃ নিয়মিত নামাজ আদায় করলে মানষিক প্রশান্তি লাভ হয়। ফলে ঘরে-বাইরে শান্তিতে থাকা যায়।

সময় সচেতনতাঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বিভিন্ন সময়ে পড়া হয়ে হয়ে থাকে আর এ কারণে একজন নামাজী ব্যক্তি সর্বদা সময় সচেতন থাকেন।

ব্যায়ামঃ নামাজে সোজা হয়ে দাঁড়ানো, হাতবাঁধা, রুকু করা, সিজদা করার ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে নড়াচড়া হয় ফলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। রুকু করার সময় কোমর থেকে মাথা পর্যন্ত শরীর সমান্তরাল অবস্থায় থাকে ফলে শরীরের পেশীগুলোর ব্যায়াম হয়ে থাকে। অন্যদিকে সিজদা করার সময় মাথায় রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়। সিজদা যত দীর্ঘ সময় হয় তত বেশী রক্ত মস্তিস্কে ও মুখমন্ডলে প্রবাহিত হয়। এর ফলে চেহারার সতেজতা বৃদ্ধি পায়, মুখের বলিরেখা ও মুখের দাগ কমে যায়। নামাজে রুকু সিজদার কারণে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি পুড়ে যায় ফলে আমাদের দেহের কাঠামোগত ভারসাম্য বজায় থাকে। 

সামাজিকঃ একই পাড়া বা মহল্লার লোকজন যখন মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করেন তখন তাদের মাঝে কুশল বিনিময় হয়। এই কুশল বিনিময় একে অপরের সঙ্গে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সহমর্মিতা সৃষ্টি করে। 

0 Comments: